নিজস্ব প্রতিবেদক: বরিশালে ১০ম শ্রেনীর এক ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে বান্ধবীসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে কোতয়ালী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে থানায় নির্যাতিতা ছাত্রীর মা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
এতে চারজন নামধারী ও চারজন অজ্ঞাতনামা আসামী রয়েছে। অভিযুক্তরা হলেন, নির্যাতনের শিকার ছাত্রীর বান্ধবী বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেনীর ছাত্রী সাবিকুন নাহার শশী ও তার মা ফাতেমা খানম চম্পা, নগরীর ৩নং ওয়ার্ডের মতাসা এলাকার তাওসিফ মাহমুদ স্বাধীন ও তার বন্ধু আসাদ আর ইসলাম সহ অজ্ঞাত ৪ জন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতয়ালী মডেল থানার ওসি আজিমুল করিম। এজাহারে উল্লেখ করা হয় , অভিযুক্ত সাবিকুন নাহার শশী ও নির্যাতনের শিকার স্কুল ছাত্রী একই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তারা দুইজনে নগরীর পেশকার বাড়ী এলাকার একজন শিক্ষকের কাছে একত্রেই প্রাইভেট পড়তো। গতবছরের মাঝামাঝি সময়ে সাবিকুন নাহারের বাসায় ডাকতে গিয়ে তাকে আসাদের সাথে ঘনিষ্ঠ অবস্থায় দেখতে পায় ভিকটিম। এ সময়ে বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য সাবিকুন নাহার ওই ছাত্রীকে অনুরোধ করে। এরপরেই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে সাবিকুন নাহার কয়েকজন বখাটে দিয়ে নির্যাতনের শিকার স্কুল ছাত্রীকে বিভিন্নভাবে হয়রানী এবং রাস্তাঘাটে আপত্তিকর প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত শুরু করে।
গত বছরের ১১আগষ্ট সকাল ১১টার দিকে অভিযুক্তরা বিদ্যালয় লাগোয়া মল্লিক রোডে ডেকে নিয়ে যৌন নির্যাতন করে। পরবর্তী বছর দশম শ্রেনীর পরীক্ষার সময়ে তারা সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে পুকুর পারে বসে মারধর করা হয়। পাশাপাশি নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার করা হয়। এতে সে মানষিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পরলে আত্মহত্যার করার একটা প্রবনতা দেখা দেয় নির্যাতিতার মধ্যে। পুরো বিষয়টি নির্যাতনের শিকার স্কুল ছাত্রীর বাবা মঙ্গলবার দুপুরে বরিশাল সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বরাবর লিখিতভাবে জানান। এই বিষয়ে অভিযুক্ত সাবিকুন নাহার ও তার মা ফাতেমা খানম চম্পা পুরো অভিযোগ অস্বিকার করেছেন।
ফাতেমা খানম চম্পা বলেন, ওই ছাত্রী আমার মেয়ের ক্ষতি করার জন্য একটি ছবি ও মুঠোফোন নম্বর বিভিন্ন জনকে দেয়। এ বিষয় নিয়ে তার সাথে কথা বললে সে আমায় গালাগাল করে। সাবিকুন নাহার বলেন, মুঠোফেনে মাকে অপমান করায় আমি তার কাছে জানতে চেয়েছিলোম। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে আমার হাতে আঘাত করে। তাই আমি তাকে একটা থাপ্পর মেরেছিলোম। আমাদের সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এসব অভিযোগ আনা হচ্ছে।
এই বিষয়ে সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবা হোসেন বলেন, ঘটনার প্রায় ৭মাস পরে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ওই শিক্ষার্থীর বাবা আমার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এতে এক সহপাঠী ও তার মায়ের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ আনা হয়েছে। এর বাইরে বিভিন্ন ভাবে হয়রানী করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্ত ছাত্রীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এ বিষয়ে কোতয়ালী মডেল থানার ওসি আজিমুল করিম বলেন, যৌন হয়রানীর অভিযোগ এনে সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। মামলা আসামীদের গ্রেফতারের জন্য আমরা বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালানা করছি।