স্টাফ রিপোর্টার: বরিশাল মেট্রোপলিটনের এয়ারপোর্ট থানা ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে বাস ও ট্রাকের সংঘর্ষে দুজন নিহত ও আটজন আহত হয়েছেন।
রোববার সকাল ৭টায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের কাশিপুর ব্র্যাক ট্রেনিং সেন্টারের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে পাঁচজন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন।
দুর্ঘটনায় নিহতরা হলেন- কুয়াকাটা-ঢাকা রুটের ব্যাপারী পরিবহনের চালকের সহকারী মো. সোহাগ (১৯) ও কুমিল্লার বাসিন্দা অজ্ঞাতনামা সুপারভাইজার।
আহত যাত্রীরা হলেন- পিরোজপুরের নেছারবাদ উপজেলার উরিবুনিয়া এলাকার মোহাম্মদ ইমন (২১), পটুয়াখালীর খাসেরহাট এলাকার মোহাম্মদ আরিফ (৩০), মহিপুরের মো. একরামুল (২৬), পটুয়াখালীর গলাচিপার মো. সোহাগ (২৫), বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার দাওকাঠি এলাকার মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান (৪০) ও পটুয়াখালীর মহিপুরের মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর (৪৫), কামাল হাওলাদার (৪০) ও রানা (২৫)। এরা সবাই ব্যাপারী পরিবহনের যাত্রী। তাদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লোকমান হোসেন জানান, ব্যাপারী পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ঢাকার উদ্দেশে যাচ্ছিল। বরিশাল সদর উপজেলার কাশিপুর ব্র্যাক ট্রেনিং সেন্টার অতিক্রমকালে একটি ট্রাককে পেছন থেকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে বাসের সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এ সময় ট্রাকটি মহাসড়কের পাশে পুকুরে পড়ে যায়।
তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থলে বাসের চালকের সহকারী নিহত ও যাত্রীরা আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সেখানে চালকের সহকারীর মৃত্যু হয়।
এদিকে দুর্ঘটনার পর বাসের ও ট্রাকের চালককের সন্ধান পাওয়া যায়নি। তবে সড়ক থেকে দুর্ঘটনাকবলিত যানবাহন সরিয়ে সবকিছু স্বাভাবিক করা হয়েছে জানিয়ে ওসি বলেন, এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে ভোর রাতে বরিশাল-ঝালকঠি মহাসড়কে বাসের সঙ্গে থ্রি-হুইলারের (সিএনজি) সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন।
নিহতরা হলেন- থ্রি-হুইলার চালক ও বরিশাল নগরের কাউনিয়া এলাকার বাসিন্দা আল-আমিন (৩৫) ও মঠবাড়িয়ার বাসিন্দা যাত্রী আলতাফ মুন্সী (৭০)।
নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোরাদ আলী জানান, শনিবার (১৫ জুন) রাত পৌনে ১টায় উপজেলার শ্রীরামপুর বাজারে সাকুরা পরিবহনের বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে সিএনজিচালক আল-আমিন ও যাত্রী আলতাফ মুন্সী নিহত হন।
তিনি আরও জানান, ওই রাতে ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম ঘটনাস্থল দিয়ে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনাকবলিত সিএনজি দেখতে পেয়ে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি জানান, পরিবার থেকে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিহত থ্রি হুইলার চালক আল-আমিনের বন্ধু মিঠু জানান, যাত্রী নিয়ে আল আমিন ঝালকাঠি যায়। সেখান থেকে এক বৃদ্ধ যাত্রীকে নিয়ে বরিশাল নগরে ফিরছিল। শ্রীরামপুর বাজারে পৌঁছালে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা পিরোজপুরগামী পরিবহনের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে দুজনের মৃত্যু হয়েছে।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মানসী বৈদ্য জানান, দুর্ঘটনায় রাত থেকে এখন পর্যন্ত মৃত অবস্থায় তিনজনকে জরুরি বিভাগে নিয়ে এসেছে। এছাড়া একজন হাসপাতালে আনার পর মারা গেছেন। আহতদের হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আবুল কালাম বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চারজনের মরদেহ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে শনিবার দুপুর ১টার দিকে বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ব্রিজের দুই থ্রি-হুইলারের সংঘর্ষে এক নারী যাত্রী নিহত হয়েছেন।
নিহত স্বপ্না বেগম (৫০) মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার আন্দারমানিক ইউপির কাদিরাবাদ গ্রামের মো. হারুন অর রশিদের স্ত্রী।
এ ঘটনায় আহত মশিউর রহমানকে (১৮) বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মশিউর বাবুগঞ্জের পাংশা গ্রামের মজিবর রহমান সরদারের ছেলে বলে জানিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের এয়ারপোর্ট থানার ওসি লোকমান হোসেন।
প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে ওসি লোকমান হোসেন জানান, স্বপ্না বেগম স্বামী ও সন্তানের সঙ্গে থ্রি হুইলার অটোরিকশায় বাবুগঞ্জের রহমতপুর ব্রিজ এলাকায় আসছিলেন। অটোরিকশাটি ব্রিজের আলী মার্কেটের সামনে পৌঁছালে বাবুগঞ্জের খানপুরাগামী একটি সিএনজির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে অটোর যাত্রী স্বপ্না বেগম মাথায় আঘাত পান। এছাড়া অপর যাত্রী মশিউর পড়ে গিয়ে জখম হয়েছেন। আহত দুজনকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক স্বপ্না বেগমকে মৃত ঘোষণা করেন।