বিশেষ প্রতিনিধিঃ
রেমিটেন্সের পর এবার রপ্তানিতেও সুবাতাস। নির্বাচনকালীন সময়ে ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে রেমিটেন্সের প্রবাহ কমলেও জানুয়ারিতে এসে সেটি গত দুই বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। এবার জানুয়ারিতে রেকর্ড ৫৭২ কোটি ৪৭ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে।
২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে রপ্তানি আয় থেকে ৪৯১টি কোটি ডলার। পরের বছর ২০২২ সালের ডিসেম্বরে রপ্তানি আয় হয় ৫৩৭ কোটি ডলার। এবার ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এসে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি আয় হয়েছে। একক মাস হিসেবে এটিই সর্বোচ্চ রপ্তানি।
আর গত জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত চলতি অর্থবছরের গত সাত মাসে আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় তৈরি পোশাকের রপ্তানি বেড়েছে ৩ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এই সাত মাসে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ২ হাজার ৮৩৬ কোটি ডলারের। আগের অর্থবছরের একই সময়ে হয়েছিল দুই হাজার ৭৪২ কোটি ডলার।
তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেছেন, জানুয়ারি মাস ৩১ দিন হওয়ায় বেশি উৎপাদনের সুবিধা পাওয়া গেছে। নতুন মজুরি কাঠামো কার্যকর হয়েছে ডিসেম্বর থেকে। বর্ধিত মজুরি পরিশোধের বাড়তি ব্যয় পুষিয়ে নিতে বিজিএমইএর পক্ষ থেকে ক্রেতাদের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। সব ক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
বিজিএমইএর পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, এ রপ্তানিকেও যথেষ্ট মনে করেন না তিনি। তবে একেবারে খারাপও বলছেন না।
জানা গেছে, বিভিন্ন কারাখানা কর্তৃপক্ষ তাদের ক্রেতাদের সঙ্গে দর নিয়ে আলোচনা করেছে। এইচঅ্যান্ডএমসহ কোনো কোনো ব্র্যান্ড ও ক্রেতা সাড়া দিয়েছে, পোশাকের মূল্য বাড়িয়েছে। সেটাও রপ্তানি আয় বাড়ার একটি কারণ। এ ছাড়া নতুন বাজারে রপ্তানি বাড়াও একটি অন্যতম কারণ। এসব বাজারের মধ্যে জাপান ও অস্ট্রেলিয়ায় পণ্যের মূল্য বেশি পাওয়া যায়। এ ছাড়া পণ্যে মূল্য সংযোজনের সুবিধা দিন দিন বাড়ছে। সেই সুবিধার প্রতিফলন দেখা যাবে আগামীতে।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুারোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ি, গত অক্টোবরে রপ্তানি কমতে শুরু করে। ২০২২ সালের অক্টোবর মাসের চেয়ে গত বছরের অক্টোবর মাসে রপ্তানি কম হয় প্রায় ১৪ শতাংশ। আর গত নভেম্বরে রপ্তানি কমে যায় ৬ শতাংশ। ডিসেম্বরে পণ্য রপ্তানি কম হয় ১ শতাংশের কিছু বেশি।
গত রবিবার প্রকাশিত ইপিবি হালনাগাদ রপ্তানি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, জানুয়ারিতে গত বছরের একই মাসের চেয়ে ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি রপ্তানি হয়েছে। গত বছরের জানুয়ারি মাসে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৫১৩ কোটি ৬২ লাখ ডলার। অর্থাৎ দুই জানুয়ারির মাধ্যে তুলনামূলক বিচারে এবার রপ্তানি পরিমাণে বেশি হয়েছে ৫৯ কোটি ডলার বা প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা।