নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরিশালে র্যাব-৮ এর অভিযানে প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাস সহ সংঘবদ্ধ ডাকাত ও অপহরণ চক্রের মূলহোতা সহ ০৪ জন ডাকাত গ্রেফতার করা হয়েছে।
০৩ জুলাই,বুধবার বিকেলে বরিশাল র্যাব-০৮ এর সদর দপ্তরে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যেমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
র্যাব-৮ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী জুবায়ের আলম জানান, গত ২৯ জুন আনুমানিক সন্ধ্যা ৭ টার দিকে এই সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে একজন ব্যক্তিকে টার্গেট করে সেই ব্যক্তিকে ময়মনসিংহে তার বাড়িতে পৌছে দেবার কথা বলে যাত্রী হিসেবে তাকে এই ডাকাত চক্রের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের নির্জন একটি স্থানে নিয়ে অস্ত্রের মুখে প্রথমে তার সর্বস্ব কেড়ে নেয়। এরপর তারা অপহৃত ব্যক্তির বাড়িতে ফোন করে মুক্তিপণ হিসেবে নগদ এর মাধ্যমে আরও ৫০হাজার টাকা আদায় করে। এই কার্যক্রম শেষে ডাকাত দল ময়মনসিংহের ভরাডোবা এলাকার নির্জন একটি স্থানে অপহৃত ব্যক্তির হাত পা বেঁধে ফেলে রেখে চলে যায়।
তিনি আরও জানান,পরবর্তীতে এই চক্রটি গতকাল ০২ জুলাই দুপুরে বেনাপোল বন্দর থেকে একই ভাবে দুইজন বিদেশফেরত যাত্রীকে টার্গেট করে। ডাকাত দলের একজন সদস্য সেই যাত্রী দু’জনের সাথে একটি পাবলিক বাসে সাধারণ যাত্রী হিসেবে অবস্থান নেয়। অন্যদিকে ডাকাতের অন্যান্য সদস্যরা তাদের ব্যবহৃত একটি প্রাইভেট কার নিয়ে বাস টিকে অনুসরণ করে। অন্যদিকে এই ডাকাত চক্রের আরেকটি দল একটি মাইক্রোবাস নিয়ে ঢাকা গোপালগঞ্জ মহাসড়কের পাশে সাম্পান হাইওয়ে রেস্তোরার কাছাকাছি স্থানে পৌছলে আইন শৃংখলা বাহিনীর পরিচয়ে বাসটির গতি রোধ করে ওই দু’জন প্রবাসী যাত্রীকে ডাকাত সদস্যেরা বাস থেকে নামিয়ে নিজেদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসে তোলে। ডাকাত চক্রটি অপহৃত ব্যক্তিদের নিয়ে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে আসার পর তাদের কাছ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা সহ একটি ব্যাগ ও অন্যান্য মালামাল লুট করে এবং তাদেরকে হাত পা বেধে রাস্তায় ফেলে দেয়। এরপর তারা বরিশাল-মাদারীপুর মহাসড়কের রাজৈর এলাকায় একটি হাইওয়ে রেস্তোরাঁয় বসে লুটকৃত মালামাল নিজেদের মধ্যে বন্টনের পরিকল্পনা করে।
কর্নেল জুবায়ের আলম জানান,গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব ৮, সিপিসি ৩ এর একটি আভিযানিক দল তাতক্ষনিকভাবে উক্ত স্থানে অভিযান পরিচালনা করে দলনেতা মেহেদীসহ ০৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়। আর বাকি ০৩জন পালিয়ে যায়। গ্রেফতাকৃতরা হলো বরিশাল বিমানবন্দর থানা এলাকার মেহেদী হাসান (৪০), মো: রেজাউল হক (৪০), পটুয়াখালী জেলার সাইফুল ইসলাম (২৮)ও মো: ওমর ফারুক (৩৬)।
র্যাব আরোও জানায়,অভিযানকালে ঘটনাস্থল থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস ও একটি প্রাইভেট কার এবং বিভিন্ন প্রকার সরঞ্জামাদি: ১টি চাইনিজ কুড়াল,১ টি হাসুয়া,১টি দা,১টি ছুরি,১টি তলোয়ার,২টি চাকু,২ টি খেলনা পিস্তল, মলম০৫ টি, এছাড়াও স্প্রে,লাঠি,গামছা ও পাটের রশি উদ্ধার করা হয়।
আরোও জানা গেছে, দলনেতা মেহেদীর বিরুদ্ধে ডাকাতি মামলা সহ বিভিন্ন থানায় অস্ত্র ও মাদকসংক্রান্ত আরও ১০ টি মামলা রয়েছে। এছাড়াও অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধেও একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে রাজৈর থানায় নিয়মিত মামলা করা হবে। এছাড়াও অন্যান্য পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের ব্যাপারে সারা দেশব্যাপী র্যাবের অভিযান চলমান রয়েছে বলে জানান অধিনায়ক কাজী জুবায়ের আলম।