শোক দিবসের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজীর অভিযোগে বরিশালে সাবেক এক যুবলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এদিকে মহানগর আওয়ামী লীগের আয়োজনে শোক দিবসের মাসব্যাপী কর্মসূচির বাইরে দলের ব্যানার ব্যবহার করে কেউ শোক দিবসের অনুষ্ঠানের আয়োজন করলে তাদের আইনি ও রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করার ঘোষণা দিয়েছে মহানগর আওয়ামী লীগ।
বরিশাল নগরীর ৫নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাহাদাত হোসেন সজীব বলেন, আমরা কয়েকজনে মিলে ১৫ ও ২১ আগস্টের শহীদদের স্মরণে ২৬ আগস্ট দোয়া মোনাজাতের আয়োজন করি। কাউন্সিলর রনি অনেকভাবে চেষ্টা করেছিলেন আয়োজন পণ্ড করে দিতে। কিন্তু বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে আমরা দোয়া-মোনাজাতের আয়োজন করি।
অনুষ্ঠান শেষ করে বাসায় এসে দেখি আমার বাসার সামনে ডিবি ও থানা পুলিশের গাড়ি। আমাকে বাসায় না পেয়ে তারা অনুষ্ঠানের আয়োজক ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সালেক ভাইয়ের বাসায় গিয়ে তাকে আটক করে নিয়ে যায়।তিনি বলেন, শনিবার বিকালে কাউন্সিলর রনি লোকজন নিয়ে থানায় গিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী মামলা করেছে শুনেছি। এই অনুষ্ঠান আমরা নিজেদের টাকায় আয়োজন করেছি। আমরা কেফায়েত হোসেন রনির নেতৃত্ব মানি না বিধায় মিথ্যা অভিযোগে চাঁদাবাজী মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে।
কাউন্সিলর কেফায়েত হোসেন রনির মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেনি। ক্ষুদে বার্তা দেয়া হলেও সদুত্তর পাওয়া যায়নি।মামলার বাদী ও ৫নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শামীম খান জানান, অনুষ্ঠানের আয়োজক আনোয়ার হোসেন সালেকসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো অনেককে আসামী করে আমি থানায় মামলা দায়ের করেছি। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর অভিযোগ করেছি। যাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি তারা শোক দিবসের নামে চাঁদাবাজী করেছে এলাকায়।
এদিকে শনিবার বেলা ১১টায় বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর বাস ভবনে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে জরুরী সভা হয় বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে দলটি। দপ্তর সম্পাদক হেমায়েত উদ্দিন সেরনিয়াবাত সুমনের সাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ৫ নং ওয়ার্ডের কতিপয় সুযোগ সন্ধানী ব্যাক্তি মহানগর আওয়ামী লীগের ব্যানার ব্যবহার করে শোক সভার নামে প্রহসনমূলক সভার আয়োজন করে। ওই ওয়ার্ডে মহানগর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের আয়োজনে ৫ আগস্ট শোকসভা করে।
তারপর সেখানে শোকসভা আয়োজন করা সম্পূর্ণ অবৈধ এবং সংগঠনবিরোধী ষড়যন্ত্র। এদের রাজনৈতিক ও আইনিভাবে মোকাবেলা করার ঘোষণা দেওয়া হয়।সাদিক আব্দুল্লাহ বলেন, যে ওয়ার্ডে আমরা অনুষ্ঠান করেছি সেখানে চাঁদা তুলে শোক দিবসের অনুষ্ঠান করার কোন মানে নেই।
কাউনিয়া থানার ওসি আব্দুর রহমান মুকুল বলেন, শোক দিবস পালনে মাসব্যাপী প্রোগ্রাম করছে মহানগর আওয়ামী লীগ। ৫ আগস্ট ৫নং ওয়ার্ডে শোক সভা করা হয়েছে। একই ব্যানারে একই কর্মসূচী আয়োজন করে চাঁদাবাজীর অভিযোগ উঠেছে একটি চক্রের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় শনিবার এক আওয়ামী লীগ নেতার মামলার প্রেক্ষিতে সাবেক এক যুবলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নামধারী আরও ৫ জন ও অজ্ঞাত রয়েছে ৪/৫ জন আসামী। বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।