Take a fresh look at your lifestyle.

বাংলাদেশে গণতন্ত্রের সমর্থনে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেবে যুক্তরাষ্ট্র!

অনলাইন ডেস্ক:  বাংলাদেশে গত ২৮ অক্টোবর থেকে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। একই সঙ্গে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থা উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বলা হয়েছে যে বাংলাদেশে গণতন্ত্রের সমর্থনে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেবে যুক্তরাষ্ট্র।

সোমবার (৩০ অক্টোবর) বাংলাদেশে রাজনৈতিক সমাবেশে সহিংসতার খবরে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস উদ্বিগ্ন বলে জানান মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক।

মুখপাত্রের কার্যালয়ের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে স্টিফেন ডুজারিক বলেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক সমাবেশে সহিংসতার খবরে জাতিসংঘের মহাসচিব উদ্বিগ্ন। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের প্রয়োজনীয়তার ওপরও জোর দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব।

সোমবার ( ৩০ অক্টোবর) জেনেভা থেকে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার মুখপাত্র লিজ ট্রোসেল এক বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশে ধারাবাহিক সহিংসতার ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। রাজনৈতিক সকল পক্ষকে আহ্বান জানাব যে সহিংস ঘটনার পরিস্থিতি এড়িয়ে চলুন। সবাইকে শান্ত এবং সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাই। আমাদের জানা মতে, রাজনৈতিক দলগুলোর বিক্ষোভ সমাবেশে ১১ জন নিহত হন। যার মধ্যে ২ জন পুলিশের সদস্য, ৬ জন বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং ২ জন পথচারী।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৮ অক্টোবর বিরোধী রাজনৈতিক দল প্রধান বিচারপতি ও বিচারপতিদের বাসভবনে হামলা চালায় এবং কমপক্ষে ৩০ জন সাংবাদিক ওই আহত হন। ওইদিন অনেককে মাস্ক পরিহিত অবস্থায় বিক্ষোভে অংশ নিতে দেখা যায়, যাদেরকে ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক মনে করা হয়। বিক্ষোভের জবাব দিতে পুলিশ বাহিনী রড, লাঠি, রাবার বুলেট এবং সাউন্ড গ্রেনেডের মাধ্যমে বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারিদের প্রতিবাদ জানায়। পুলিশ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের সারা দেশব্যাপি বাসভবনেও রেইড দেয়। নির্বিচারে পুলিশ শতাধিকেরও বেশি বিরোধী নেতাকর্মীকে আটক করে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়, আমরা পুলিশের প্রতি আহ্বান জানাই যে পরিস্থিতি অনুযায়ী আইনের নীতি অনুযায়ী সর্বোচ্চ বলপ্রয়োগ করুন। সকল নিহত এবং আহত হওয়ার ঘটনাগুলোর তদন্ত করতে হবে। গত ৩০ অক্টোবর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীরকে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে আক্রমনের অভিযোগে আটক করা হয়। দলটির অনেক নেতাকর্মীই আটক হওয়ার ভয়ে লুকিয়ে আছেন। আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই, সঙ্কটকালিন এই সময়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা কমাতে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সংযম প্রদর্শন করতে হবে এবং আসন্ন নির্বাচনের আগে ও পরে সকল বাংলাদেশির মানবাধিকার রক্ষায় সরকারকে সজাগ থাকতে।

এদিকে, ঢাকায় ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সংগঠিত ঘটনাবলির পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের জন্য বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে সেদিন সহিংসতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে দেশটি।

সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের সমর্থনে প্রয়োজনে ব্যবস্থা নেবে যুক্তরাষ্ট্র।

এক প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র ম্যাথু মিলার সোমবার বলেন, গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় যে রাজনৈতিক সহিংসতা হয়েছে, আমরা তার নিন্দা জানাই। পুলিশের এক কর্মকর্তা ও একজন রাজনৈতিক কর্মীর নিহত হওয়া, হাসপাতাল ও বাসে আগুন দেওয়া অগ্রহণযোগ্য। একইভাবে সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে সহিংসতা গ্রহণযোগ্য নয়। ২৮ অক্টোবরের সমাবেশের ঘটনাবলির পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত ও সহিংসতার জন্য দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব ভোটার, রাজনৈতিক দল, সরকার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যমসহ সবার।

আরেক প্রশ্নের জবাবে মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বলেন, কূটনীতিকেরা সুশীল সমাজের সংগঠন, গণমাধ্যম পেশাজীবী, ব্যবসায়ী নেতা, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, শিক্ষাবিদসহ বিভিন্ন ব্যক্তি-সংগঠনের সঙ্গে কথা বলেন। কূটনীতিকেরা তাঁদের দৈনন্দিন কাজের অংশ হিসেবেই এসব করেন। তাঁরা তাঁদের এই কাজ করে যাবেন।

Leave A Reply

Your email address will not be published.